পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করবেন এবং কীভাবে

আজকের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে পাসপোর্ট প্রতিটি দেশের নাগরিকদের জন্য অপরিহার্য ডকুমেন্ট হিসেবে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশীদের জন্য পাসপোর্ট থাকা শুধু সুবিধায় নয়, বরঞ্চ পাসপোর্ট থাকলে আপনি বিদেশে ভ্রমণ থেকে শুরু করে কাজ এর জন্য এবং পড়াশোনার জন্য যেতে পারবেন। এমনকি অর্থনীতি এবং সমাজের ক্রমবর্ধমান বিশ্বায়নের সাথে পাসপোর্ট থাকা বাংলাদেশীদের জন্য সুযোগের একটি জগত খুলে দিতে পারে।

পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করবেন

এই নিবন্ধনে, আমরা বাংলাদেশীদের জন্য পাসপোর্টের গুরুত্ব এবং গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট ও, পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করবেন এবং কিভাবে করবেন, সেই বিষয়গুলো আপনাদের জানা দরকার এবং তা অন্বেষণ করবো। আপনার পাসপোর্ট থাকা সুবিধা থেকে শুরু করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পদক্ষেপ গুলি এবং সমস্ত প্রয়োজনের তথ্য আলোচনা করবো।

পাসপোর্ট রিনিউ খরচ কত

বাংলাদেশীদের পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করবেন এবং রিনিউ খরচ নিয়ে আলোচনা করবো। এবং পাসপোর্টের রিনিউ এর বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের তথ্য প্রদান করবো। আপনি যদি ঘন ঘন ভ্রমণকারী হয়ে থাকেন তাহলে, আপনার পাসপোর্ট আপডেট করার প্রয়োজন হবে। এবং আপনার অভিজ্ঞতার জন্য বাংলাদেশী পাসপোর্ট রিনিউ করার খরচ এবং প্রয়োজনীয়তা জানা দরকার।

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছরের মেয়াদ সহ (ই-পাসপোর্ট)

ই-পাসপোর্ট ৪৮ পেজ ৫ বছর মেয়াদ
নিয়মিত ডেলিভারি ৪৮ পেজ টাকা-৪,০২৫
এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৪৮ পেজ টাকা-৬,৩২৫
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৪৮ পেজ টাকা-৮,৬২৫

৪৮ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছরের মেয়াদ সহ (ই-পাসপোর্ট)

ই-পাসপোর্ট ৪৮ পেজ ১০ বছর মেয়াদ
নিয়মিত ডেলিভারি ৪৮ পেজ টাকা-৫,৭৫০
এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৪৮ পেজ টাকা-৮,০৫০
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৪৮ পেজ টাকা-১০,৩৫০

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছরের মেয়াদ সহ (ই-পাসপোর্ট)

ই-পাসপোর্ট ৬৪ পেজ ৫ বছর মেয়াদ
নিয়মিত ডেলিভারি ৬৪ পেজ টাকা-৬,৩২৫
এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৬৪ পেজ টাকা-৮,৬২৫
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৬৪ পেজ টাকা-১২,০৭৫

৬৪ পৃষ্ঠা এবং ১০ বছরের মেয়াদ সহ (ই-পাসপোর্ট)

ই-পাসপোর্ট ৬৪ পেজ ১০ বছর মেয়াদ
নিয়মিত ডেলিভারি ৬৪ পেজ টাকা-৮,০৫০
এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৬৪ পেজ টাকা-১০,৩৫০
সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি ৬৪ পেজ টাকা-১৩,৮০০

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: পাসপোর্ট তৈরির নিয়মাবলী এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে। তাই আপনি পাসপোর্ট করার আগে, পাসপোর্ট অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে বা তাদের অফিসে গিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করে তথ্যগুলো যাচাই করে নিবেন।

পাসপোর্ট সংশোধন ও রিনিউ

পাসপোর্ট সংশোধন ও রিনিউ করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ রয়েছে, তা আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। আপনার পাসপোর্টে কোন ভুল তথ্য থাকলে পাসপোর্টের সেই তথ্যগুলো আপনাকে সংশোধন করতে হবে। পাসপোর্ট সংশোধন করার জন্য সাধারণত যে তথ্যগুলোর প্রয়োজন হয় সেই তথ্যগুলো নিচে দেওয়া হলো:
  • নাম
  • ঠিকানা
  • জন্ম তারিখ
  • জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
১। পাসপোর্ট সংশোধন করার জন্য প্রথমে আপনাকে অনলাইন ফর্ম পূরণ করতে হবে।

২। অনলাইন ফর্ম পূরণ করার জন্য পাসপোর্ট অফিসের এই ওয়েবসাইটে যান: www.epassport.gov.bd

৩। আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করুন।

পাসপোর্ট সংশোধন করার জন্য যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো লাগবে সেগুলো নিচে দেওয়া হলো:

১। অনলাইনে আবেদন করেছেন সে ফর্মটি লাগবে।

২। আপনার পুরাতন পাসপোর্টের কপি লাগবে এবং সাথে করে পুরাতন পাসপোর্ট নিয়ে যাবেন।

৩। আপনি যে কারণে আপনার পাসপোর্টটি সংশোধন করবেন তার কারণ ও প্রমাণসহ নিয়ে যাবেন। যেমন: (নতুন জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার এড করবেন, অথবা নাম ভুল, বা জন্ম তারিখ ভুল) ইত্যাদি।

৪। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা প্রদান করবেন সেই ব্যাংক আপনাকে একটি রশিদ দিবে।

৫। সংশোধন করার দিন সেই রশিদ নিয়ে যাবেন।

৬। এরপরে সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ফর্ম সঠিকভাবে পূরণ করে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

৭। আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে আপনাকে তারা একটি রিসিট প্রদান করবেন।

এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক পাসপোর্ট কিভাবে রিনিউ করবেন মেয়াদ শেষ হলে বা শেষ হওয়ার আগে সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানুন।

পাসপোর্ট কিভাবে রিনিউ করবেন মেয়াদ শেষ হলে

১। পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য প্রথমে পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইটে যেতে হবে।

২। তারপর প্রয়োজনে তথ্য দিয়ে ফর্ম গুলো পূরণ করে ফেলবেন।

রিনিউ করার জন্য প্রয়োজনীয় যে কাগজপত্র গুলো লাগবে:

  • পূর্ণাঙ্গ আবেদন ফরম সাথে নিয়ে যাবেন।
  • পুরাতনের পাসপোর্ট মূল কপিটি নিয়ে যেতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি।
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রিনিউ করার রশিদ নিয়ে যাবেন।
  • আপনার আবেদন ফরম জমা দেওয়া হয়ে গেলে, পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলার জন্য মেসেজ দিবে।
  • নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে উপস্থিত হবেন এবং বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবেন।
  • আপনার সকল কার্যক্রম এবং কাগজপত্র জমা দিয়ে দিন।
  • আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে আপনাকে একটি পাসপোর্ট অফিস থেকে রসিদ প্রদান করবে।
  • আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলে নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।
  • সাধারণত পাসপোর্ট প্রস্তুত হওয়ার সময় আপনাকে ম্যাসেজ দেওয়া হবে, অথবা আপনি অনলাইনে তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার পাসপোর্ট প্রস্তুত হওয়া সম্পর্কে জানতে পারবেন।
  • এরপর আপনার রিসেট দেখিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।
আপনি যদি আপনার পাসপোর্ট অনলাইনে চেক করতে না পারেন তাহলে আপনি সঠিক তথ্যর জন্য পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। অথবা আপনি আমাদেরকে মেসেজ দিতে পারেন, আমরা আপনার পাসপোর্ট বিষয়ে আরো তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে পারবো।

পাসপোর্টের মেয়াদ কতদিন থাকতে রিনিউ করবেন এবং কীভাবে?

আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত ৬ মাস আগে রিনিউ করার জন্য আবেদন করবেন। কারণ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে রিনিউ করা উচিত। আপনি যদি হঠাৎ করে বাইরে চলে যাওয়ার জন্য প্লান করেন আর পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে, তাহলে ভিসা পেতে সমস্যা হবে। এই জন্য হাতে সময় রেখে পাসপোর্ট রিনিউ করা ভালো। আর আপনার যদি বাইরে যাওয়ার কোন প্ল্যান না থাকে তাহলে আপনি মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও করতে পারবেন, এটি আপনার উপরে নির্ভর করবে।

পাসপোর্ট কিভাবে রিনিউ করবেন সেই বিষয়ে আমরা বিস্তারিত উপরে আলোচনা করেছি। পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইটের লিংক উপরে দেওয়া আছে, সেখান থেকে আপনি ফরম পূরণ করে আবেদন করতে পারবেন।

সরকারি পাসপোর্টের মেয়াদ

সরকারি পাসপোর্ট সাধারণত সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সরকারি কাজের জন্য ব্যবহার করে থাকেন। এমনকি এটি এমপি মন্ত্রীরাও ব্যবহার করেন। সরকারি পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং রিনিউ প্রক্রিয়া অন্যান্য সাধারণ পাসপোর্টের থেকে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। সরকারি পাসপোর্টের মেয়াদ এবং রিনিউ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানুন। সরকারি পাসপোর্টের মেয়াদ (৫ বছর) হয়ে থাকে। তবে এটি বিশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী অথবা, সরকার নির্ধারণ এর উপর নির্ভর করে এটি কম বা বেশি হতে পারে।

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২4

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম ২০২৪ সালে বাংলাদেশের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। নিচে নিয়ম গুলো দেয়া হলো:

১। আপনি যদি নতুন পাসপোর্ট কারি হয়ে থাকেন, তাহলে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করুন তারপর লগইন করে আবেদন ফরম পূরণ করুন।

২। প্রথমে পাসপোর্ট অফিসের ওয়েবসাইটে যান, এরপর পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করুন।

৩। আপনার অনলাইনে আবেদন ফরমটি লাগবে এবং পুরাতন পাসপোর্টের মূল কপি ও ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, এবং পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

৪। পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য নির্ধারিত টাকা ব্যাংকে জমা দিন এবং টাকা জমা দেওয়ার পর আপনার প্রাপ্ত রশিদটি সংরক্ষণ করে আবেদন ফরমের সাথে যুক্ত করুন।

৫। পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য কত টাকা লাগবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত উপরে আমরা ছকের মাধ্যমে দিয়েছি। আপনি উপরে তথ্যগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে

মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে আপনার করণীয় কি? সেই বিষয়ে বিস্তারিত আপনাকে জানাবো। পাসপোর্ট হারানোর পর আপনাকে একটি সাধারণ ডায়েরি অথবা জিডি করতে হবে। আপনার নিকটস্থ থানায় জিডি করার সময় আপনাকে একটি কপি প্রদান করবে। সেই জিডির কপিটি আপনার নতুন পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য সাহায্য করবে।

মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে

মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে আপনাকে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সংগ্রহ করতে হবে তার নিচে দেওয়া হল:
  • পূর্ণাঙ্গ আবেদন ফরম।
  • জিডির কপি লাগবে।
  • আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। হারানো পাসপোর্টের ফটোকপি যদি থাকে।
  • নতুন পাসপোর্টের আবেদন করার নির্ধারিত টাকা প্রদানের রশিদ।

লেখকের শেষ মন্তব্য

পাসপোর্ট হারানোর পরিস্থিতি আমাদের জন্য হতাশজনক একটি বিষয়। তবে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে নতুন পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব সাধারণ ডায়েরি অথবা জিডি করার মাধ্যমে। এবং উপরের উল্লেখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পাসপোর্ট সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য বা প্রশ্নের জন্য আমাদেরকে কমেন্ট করতে পারেন। পাসপোর্ট অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন বা তাদের অফিসে যেতে পারেন। আপনার পাসপোর্টের যাত্রা সফল হোক।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মোমেন্টারি আইটিতে আপনার মতামত কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url