কত স্কয়ার ফুটে কত টন এসি লাগে
গরমের কারণে আমরা এসি ব্যবহার করে থাকি। দৈনন্দিন জীবনে আমাদের এসির খুবই প্রয়োজন। কারণ এসি আমাদের শীতলতা এবং স্বস্তি প্রদান করে থাকে। এবং গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করে। আসুন আমরা জানি আমাদের রুমের জন্য কত স্কয়ার ফুটে কত টন এসি লাগে সে বিষয়ে।
গরমে এসির ব্যবহার করার প্রয়োজন এবং এসি কেন দরকার এর মূল কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং এসি বিষয়ে নিচের তথ্যগুলো জানুন।
ভালো এসি চেনার উপায়
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যায় বাংলাদেশে যা আপনি নিশ্চিন্তে কিনতে পারবেন। যেমনঃ স্যামসা, অলটন, এলজি, গ্রী ইত্যাদি। এসির মধ্যে অনেকগুলো গুণ এবং বৈশিষ্ট্য আছে। সে জন্য এসি কিনার আগে আপনাকে সে বৈশিষ্ট্য গুলো জানতে হবে। নিচে এর বৈশিষ্ট্য দেয়া হলোঃ
- এসি কেনার আগে রুমের সাইজ জেনে কিনুন।
- রুমের আদ্রতা ও তাপমাত্রা পরিমাণ জানুন।
- আপনার রুমের জন্য কত টন এসি প্রয়োজন সেটি জানুন।
- কি ধরনের এসি নিবেন (ইনভার্টার) না (নন ইনভার্টার) সেই বিষয়ে জানুন।
- আপনার পছন্দের ব্রান্ডের এসে কিনার আগে সেই কোম্পানির সুবিধা গুলো জেনে নিন।
১ টন এসির বিদ্যুৎ খরচ কত
এসির বিদ্যুৎ খরচ বলতে আমাদের ধারণা বিল অনেক আসে। আসলে কি এসির বিল অনেক আসে? এক টন এসির বিল বেশি আসে না। এক টন এসি হচ্ছে সাশ্রয়ী এবং বিল কম আসে তবে এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকটা বিদ্যুৎ খরচ নির্ভর করে। এক টন ইনভার্টার এসি বিদ্যুৎ খরচ কম। ইনভার্টার এসি আপনি যত ব্যবহার করবেন আপনার বিদ্যুৎ খরচ তত কম আসবে।
এসির তাপমাত্রা কত রাখা উচিত
আমরা রুম ঠান্ডা রাখার জন্য এসি তাপমাত্রা অনেক কমিয়ে রাখি। এতে করে রুম ঠিকই ঠান্ডা হয় কিন্তু আমাদের শরীরের ক্ষতি হয়। এসি তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ২০ এবং সর্বোচ্চ ২৪ রাখা উচিত। রুম ঠান্ডা হয় আবার বিদ্যুৎ বিলও কম আসে। এবং এই তাপমাত্রা শরীরের জন্য ভালো। তবে বলা যায় এসি তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৫ রাখা বেশি ভালো।
এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপায়
এসে বিদ্যুৎ খরচ কমাতে হলে আপনাকে এসে নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। যেমন এসি হঠাৎ অন অফ করা যাবে না। আবার একটু চালিয়ে এসি অফ করা যাবে না এতে করে বিদ্যুৎ খরচ বেশি আসে। রুম ঠান্ডা হয়ে গেলে এসি বন্ধ করে দিন। আপনি যদি দিনে এবং রাতে মিলে ছয় থেকে সাত ঘন্টা এসি ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনার বিদ্যুৎ খরচ খুবই কম আসবে।
কত স্কয়ার ফুটে কত টন এসি লাগে
রুমের সাইজ অনুযায়ী আমরা এসি লাগিয়ে থাকি। তো আসুন আমরা জানি আমাদের রুমের সাইজ অনুযায়ী কত স্কয়ার ফুটের জন্য কত টন এসির প্রয়োজন। এবং তা নিচে নির্ধারণ করে দেয়া হলো।
স্কয়ার ফুট (SQ FT) এসির ক্ষমতা (TON)
- ১০০ - ১৫০ ০.৮ - ১ টন
- ১৫০ - ২৫০ ১ - ১.৫ টন
- ২৫০ - ৪০০ ১.৫ - ২ টন
- ৪০০ - ৫০০ ২ - ২.৫ টন
- ৫০০ - ৭৫০ ২.৫ - ৩ টন
- ৭৫০ - ১০০০ ৩ - ৩.৫ টন
এসি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা কি
সুবিধা:
এসি ব্যবহার করার আগে সুবিধা অসুবিধা গুলি জেনে নিন। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলোঃ
- এসি ব্যবহার করে গরমকালে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে থাকে।
- এসি ব্যবহার করার ফলে আপনার শরিলকে ঘামের হাত থেকে রক্ষা করবে এবং ঘরের বাতাস ফিলটার করে ধুলা এবং অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে।
- এসি ব্যবহার করলে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এতে করে মানুষের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
- এসি ব্যবহার করার ফলে ঘর শুষ্ক ও আরামদায়ক করে তোলে।
- গরমের সময় অনেক ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। এসি ব্যবহার করার ফলে সে ইলেকট্রিক জিনিসগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়।
অসুবিধা:
- এসি ব্যবহার করার ফলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। তবে সেটি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অনেক টা বিদ্যুৎ বিল কম আসে।
- এসি দীর্ঘ সময় ব্যবহার করার ফলে ত্বকের শুষ্কতা এবং ঠান্ডা কাশি সমস্যা হতে পা।
- প্রতি বছরে এসি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার করতে হয় এটা একটি অর্থের ব্যয় ঘটায়।
এসির রিমোট ব্যবহারের নিয়ম-কানুন
এসির রিমোট ব্যবহার নিয়ম-কানুন এসির মডেল অনুযায়ী নির্ভর করে। নিচে নিয়ম-কানুন ব্যাখ্যা করা হলোঃ
এসির মোড কিভাবে ব্যবহার করবেন তা নিচে দেয়া হলঃ
- কুলঃ শীতল করার জন্য।
- ফ্যানঃ শুধু ফ্যান চালানোর জন্য।
- ড্রাইঃ আদ্রতা কমানোর জন।
- হিটঃ আপনার এসি কুল এবং হট হলে এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
- অটোঃ এই অটো অপশনটি এসি নিজে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন করে।
আপনার এসির ম্যানুয়ালে রিমোটের সকল ফাংশন এবং সঠিক ব্যবহার দেওয়া আছে। তাছাড়াও আপনি আপনার এসি ব্র্যান্ডের ওয়েব সাইটে গিয়ে এর ডিটেলস জানতে পারবেন।
বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এসি কোনটি
বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসি পাওয়া যায়। এর মধ্যে কিছু জনপ্রিয় এসি ব্যান্ডের নাম নিচে দেয়া হলঃ
- গ্রি
- হায়ার
- স্যামসাং
- ডাইকিন
- অলটন
- এলজি
বিবেচনার বিষয়
- ঘরে কত স্কয়ার ফুটে কত টন এসি লাগে তা জানুন।
- এসি কিনার আগে আপনার বাজেট নির্বাচন করুন।
- আপনি যে ফিচারগুলো চান সেইগুলো আছে কিনা তা বিবেচনা করুন।
- যে ব্র্যান্ডের এসি ক্রয় করবেন সেটির ওয়ারেন্টি এবং গ্যারান্টি সুবিধা বিষয়ে জেনে নিন।
মন্তব্য
যে ব্র্যান্ডের এসি ক্রয় করবেন সেই এসির রিভিউ পড়ে নিন এবং দেখে নিন। আর কত স্কয়ার ফুটে কত টন এসি লাগে তা জেনে নিন। এসির বিষয়ে সম্পূর্ণ যাচাই-বাছাই করে এসি ক্রয় করুন। আপনার এসিটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার করার জন্য উপযোগী কিনা। আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের পেজের সাথে যুক্ত থাকুন। এবং কমেন্ট করে আপনার মতামত জানাতে পারেন।
মোমেন্টারি আইটিতে আপনার মতামত কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url